দুর্ঘটনা
শুভশ্রী সাহা
দুদিন
হয়ে গেছে এবাড়ির বড় বউ পলি মারা গেছে কিন্তু আত্মীয় স্বজন সবার আসা যাওয়া
চলছে। সরিতের ভালো লাগছে না, সে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসছে বিকেলবেলাটায়। সেই
এক কথা,,--- পলির মতো সাবধানী মানুষ প্রেসার কুকার থেকে পুড়ে মারা
গেল! আহারে স্টোরে যাবার তাড়া! ব্যবসা টাতো প্রাণ না! এর উত্তর কে
দেবে!,তার দোকানটা এ-ই মফস্বলের সেরা স্টোর। সরিত মুখচোরা ছেলে, বিয়ের পর
পলি দোকানের হাল ধরতেই বদলে গেল। পলির কাজ নিটোল। ওর পারফেকশনের চাপে
সরিতের চোখ ফেটে জল এসে যেত প্রায়ই।
--- বাবা চা খাবে? গীতালি এলেন
---
।
বড় ভালো ছেলে, তার মেয়েটাকে মাথায় করে রাখত-- পলি এমনিতে বেশ জেদী ,
কথা না শুনলে রসাতল করতো। সরিত ,হাসিমুখেই মানিয়ে নিতো। পলির জন্য সরিতের
উন্নতি, কপাল, ভোগই করতে পারল না পলিটা!
মেয়েটাকে গেরোতেই ধরেছিল! নইলে প্রেশার কুকার থেকে এত বড় দুর্ঘটনা ! রোজের জিনিস! উঃ!
,
সরিত চুল খামচে ধরল তার জীবনটা কি ভাবে চলবে!
-- সরিত দা, চা,
--- বুলি, , এমন ভাবে বাঁচা যায়!
বুলির চোখ উপচে জল , সে পলির বিপরীত নরম, মায়াবী। বুলি জামাইবাবুর হাতটা ধরল।
ওর গোড়ালীর দিকে সরিতের চোখ গেল। গোড়ালির ভাঁজে সরিতের পাপটা লুকোনো আছে।
পলি
কেন বুলির মতো হলো না, বড় কষ্ট দিতো! কথায় কথায় নির্বোধ বলে ব্যঙ্গ,
অপমান, অযোগ্যতা প্রমাণ করতে ব্যস্ত হত । সরিতের মা, বাড়ির লোকজন
সরিতকে গোপনে আলাদা ফ্ল্যাট নেবার জন্য অনুরোধ করেছিল। সে কি করে পরিবার
ছাড়বে! সরিত তার আর বুবুনের জন্য একটু শান্তি---
সে জানে বুবুনের জন্য বুলি তাকে ফেরাবেই না।
সরিত বাড়ি ফিরে তার শোবার ঘরে ঢুকল।
দোতলার বারান্দায় পাতাবাহারের গাছ। পলির সখ। সবচেয়ে বড় টবটার মাটির ভেতরেই
প্রেসারকুকারের লিডের পালটে দেওয়া ওয়েটটা সে লুকিয়ে রেখেছে।
...................