নিরুদ্দিষ্ট যাত্রী
শেলী ভট্টাচার্য
ফোনের
শব্দে আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেল নির্বাণের। ভুরু কুঁচকে চোখ মেলে দেখল,
বেডরুমের বাঁদিকের জানলা দিয়ে হাল্কা নরম আলোর রেখা উঁকি দিচ্ছে। এত ভোরে
কার তাড়া পড়ল যে ফোন করতে হল। ভাবনার মাঝেই ফোনের রিং বন্ধ হয়ে গেল। ছেড়ে
যাওয়া ঘুমটা আবার জড়াজড়ি করার উপক্রম করতেই, চোখ মেলে তাকাল নির্বাণ। ফোনটা
আবার বাজছে। বিছানা ছেড়ে টেবিলের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই ও দেখল ফোনের
স্ক্রিনে ভেসে উঠছে 'ডক্টর দীপঙ্কর ডেলহি কলিং ...।'
একভাবে
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মনে করার চেষ্টা করল নির্বাণ। হঠাৎ করেই ওর মনে পড়ল
তখন, গত বছর দিল্লিতে একটা সেমিনারে গিয়ে আলাপ হয়েছিল ভদ্রলোকের সঙ্গে।
ধীরে ধীরে মানস চোখে ভেসে উঠল ভদ্রলোকের চেহারাটা। অ্যাভারেজ হাইট, সৌম্য
মুখাবয়ব, উজ্জ্বল চোখের দৃষ্টি আর চিবুকে ঘন খাঁজ। টাইম ট্রাভেলের ফিউচার
ভিশনের উপরে একটা সেমিনার হয়েছিল গতবছর দিল্লিতে। কল্পনা চাওলার স্মৃতির
উদ্দেশে যে দুটো স্পেস রিসার্চ স্টেশন কুরুক্ষেত্রের আশপাশে গড়ে উঠেছিল,
তার একটাতে রিসার্চের কাজ করে নির্বাণ। সেখানকার প্রতিনিধি হিসাবে তাই ও
গিয়েছিল সেমিনারটাতে। ওখানেই বাঙালী প্রবাসী ডাক্তার দীপঙ্কর মাইতির সঙ্গে
ওর দেখা হয়েছিল। ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা বলে ও বুঝেছিল, বেশ অন্যরকমের মানুষ
ওঁ।
নির্বাণের 'হ্যালো' বলার আগেই ওদিক থেকে কাঁপতে থাকা কণ্ঠস্বর ভেসে এল।
"সরি, সরি মিস্টার বোস। আমি বড্ড অসময়ে আপনাকে কল করে ফেলেছি। কিন্তু না করেও থাকতে পারলাম না।"
হুড়মুড়িয়ে কথাগুলো বললেন ভদ্রলোক।
ভদ্রলোকের গলার স্বর শুনে রীতিমতো ঘাবড়ে গেল নির্বাণ। উৎকণ্ঠায় প্রশ্ন করল ও
"আপনি ঠিক আছেন তো? কোনও বিপদ টিপদ হয়নি তো?"
"বিপদ
একটা হতে চলেছে! তবে আমার নয়, অন্য কারও। মানে, আমি বলতে চাইছি একজনের নয়,
বেশ কয়েক জনের। ওরা ভ্যানিশ হয়ে যেতে পারে ভবিষ্যতে!"
'ভ্যানিশ'
শব্দটা শুনে থমকে গেল নির্বাণ। মনে মনে ভাবল, সেদিন ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা
বলে ওঁর মাথায় গোলমাল আছে বলে তো মনে হয়নি। আবার ওঁ ম্যাজিসিয়ানও নন।
সাধারণ একজন ডাক্তার। দীপঙ্কর মাইতির মুখ থেকেই শুনেছিলেন, বাবার একমাত্র
ছেলে তিনি। দেশ বাড়ির সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়ে দিল্লির অশোকনগরে চলে
এসেছিলেন। সেখানে একটু ব্যাকওয়ার্ড জায়গায় নিজের একটা ছোটখাটো চ্যারিটেবল
হাসপাতাল তৈরি করেছেন। বিয়ে থা করেননি। প্রকৃত অর্থেই সমাজের বন্ধু হয়ে
অকাতরে সমাজ সেবা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে ভদ্রলোক যে সমস্ত কথা
বলছেন, তার খেই ধরতে পারছে না নির্বাণ। গলা কাঁচিয়ে প্রশ্ন করল ও
"কাদের বিপদ? আসলে আমি আপনার কথাগুলো ঠিক বুঝতে পারছি না।"
"আমিই হয়তো আপনাকে ঠিক বোঝাতে পারছি না।"
ভদ্রলোকের গলায় অসহায়তা।
নির্বাণ
ফোনটা কান থেকে একটু নামিয়ে দেখল সাড়ে পাঁচটা বাজে। ভোরের এই সুমধুর
ঘুমকাতুরে সময়ে ভদ্রলোক ওকে বোঝাতে বসলে সমস্যা হবে, মনে মনে ভাবছিল ও।
"আপনার মনে আছে, আমি আপনাকে আমার ছোটবেলার একটা ঘটনা বলেছিলাম। সেই পুকুর থেকে মূর্তি পাওয়ার ব্যাপারটা।"
ঠিক মনে করতে পারল না নির্বাণ। পাছে কথা বেড়ে যায় তাই সংক্ষেপে 'হ্যাঁ হ্যাঁ' বলে দিল। হাই উঠছিল ওর।
হাই তোলার শব্দটা পেতেই ভদ্রলোক আরও বিনয়ী গলায় বললেন
"এই
অসময়ে আমি বড্ড বিরক্ত করছি আপনাকে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমি এই মুহূর্তে
এমন একটা ঘটনার সাক্ষী হয়েছি যে, উত্তেজনায় আমার সারা শরীর কাঁপছে। বিষয়টা
টাইম ট্রাভেলের সঙ্গে জড়িত বলেই আপনাকে কল করলাম।"
"টাইম ট্রাভেল!"
নির্বাণের গলায় আছড়ে পড়ল তুমুল বিস্ময়।
"হ্যাঁ, তবে এই মুহূর্তে আমার কাছে কোনও প্রমাণ নেই। আসলে বুঝতেই পারিনি ওই এগারো জন যে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাবে।"
ভদ্রলোকের কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছিল না নির্বাণ। ও কোনওরকমে নরম গলায় বলল
"বলছি কী, আমি আপনাকে আর দু-তিন ঘন্টা পরে কল করছি। আমি আসলে অনেকটা রাত করে ঘুমিয়েছিলাম তো ...!"
ভদ্রলোক প্রচণ্ড লজ্জায় বললেন
"আবার বলছি সরি, সরি। আপনি রেস্ট নিয়ে নিন। পরে কথা বলছি। আর দেরি হলেও বা কী!"
ওঁর কথার অর্থ বোঝার চেষ্টা না করে 'রাখছি' বলে ফোন কাটল নির্বাণ।
স্বভাবতই
ঘুম ভাঙতে বেশ দেরি হয়ে গেল ওর। হাই তুলে আড়মোড়া ভাঙ্গতেই দেখল প্রায় আটটা
বাজে। ন'টায় সেন্টারে ঢুকতে হবে। তাড়াতাড়ি উঠে নিজের রুটিন মতো কাজ সারতে
লাগল ও।
রিসার্চ
সেন্টারে পৌঁছে কিছুটা কাজ সামলানোর পরেই নির্বাণের মনে হল, দীপঙ্কর
মাইতিকে একবার কল করা উচিত। ভদ্রলোক কী যে বলতে চাইছিলেন, ঠিক বোঝা যাচ্ছিল
না। তখনই স্মৃতিতে একটু চাপ দিল নির্বাণ। কিছুক্ষণ একনাগাড়ে ভাবতেই ওর মনে
পড়ে গেল, দীপঙ্কর মাইতি গল্প করে বলেছিলেন, ওঁর মামাবাড়ির কথা। সেখানে শান
বাঁধানো পুকুর ঘাট ছিল। কিশোরবেলায় গরমের ছুটিতে সেখানে বেড়াতে যেতেন ওঁ।
সেসময় নাকি একটা আজব ঘটনা ঘটেছিল। স্নান করতে নেমে ওঁর পায়ে ঠেকেছিল একটি
ধাতব মূর্তি। ও দুহাতে উপরে তুলে দেখে প্রায় দু ফুট উচ্চতার গোবিন্ত মূর্তি
চকচক করছে। দুধের সরের মতো তার সোনালী ছায়া ছড়িয়ে পড়ছে পুকুরের জলের
উপরিভাগে। ঠিক তখনই কে যেন ওকে ডাকতে আসতেই, ওর হাত ফসকে মূর্তিটা ঝপ করে
জলে পড়ে গিয়েছিল। তারপর হাজার খুঁজেও আর ওটার হদিস পায়নি কেউ তখন। দিদিমাকে
জানাতে, জেলে ডেকে এনে জাল ফেলাও হয়েছিল পুকুরে। কিন্তু কিছুই পাওয়া
যায়নি।
এর প্রায় আট নয় বছর পরে, সেই মূর্তির হদিস
পাওয়া গিয়েছিল। দীপঙ্কর তখন কলকাতার এক হাসপাতালে ইন্টার্ণশিপ করছিল, ওঁর
বড় মামা ফোন করে জানিয়েছিল ঘটনাটা। মামাবাড়ির পাড়ার কৃষ্ণ মন্দিরের
অষ্টধাতুর চকচকে গোবিন্দ মূর্তি নাকি গয়না সহ উধাও হয়ে গিয়েছিল। তার কয়েক
মাস পরে মামাবাড়ির পুকুরে জাল ফেলতেই সেই মূর্তি উঠে এসেছিল। গয়নাগুলো
অবশ্য পাওয়া যায়নি। বড় মামার কাছে কথাগুলো শুনে বিশ্বাস হচ্ছিল না
দীপঙ্করের। সেসময় ওঁর দিদিমাও বেঁচে ছিলেন না। তাই ওঁর আগের অভিজ্ঞতার
সাক্ষী ছিল না কেউ। দিদিমা সেসময় জাল ফেলার ব্যবস্থা করলেও, ছোট নাতির এই
অভিজ্ঞতার কথা কাউকে জানাননি।
এই ঘটনাটা নির্বাণকে বলার পর দীপঙ্কর মাইতি সেদিন প্রশ্ন করেছিল,
'আচ্ছা,
বলুন তো সেই কিশোরবেলায় আমি টাইম ট্রাভেল করে আট নয় বছর এগিয়ে গিয়েছিলাম,
নাকি মূর্তি সমেত ঘটনাটা সময়ের সিঁড়িতে পিছলে গিয়ে আমার কাছে এসে
পৌঁছেছিল?'
নির্বাণ অনেকক্ষণ ভেবেচিন্তে বলেছিল,
'এক্ষেত্রে
যেহেতু আপনার অস্তিত্বের প্রমাণ ক্রমপর্যায়ে বজায় রয়েছে, তাই ধরে নিতে হবে
মূর্তিটাই কিছুক্ষণের জন্য সময়ের কূপে পড়ে গিয়েছিল।'
'এরকম অভিজ্ঞতা কি অনেকেরই হয়?'
প্রশ্ন করেছিলেন ডাক্তার দীপঙ্কর মাইতি।
'আমি তো আগে কখনও কারও মুখে সেরকম শুনিনি। আচ্ছা, আর কী কী উপলব্ধি হয় আপনার?'
নির্বাণের ভদ্রলোককে বেশ আকর্ষণীয় লাগছিল।
উদাস চোখে চেয়ে ভদ্রলোক বলেছিলেন,
'মাঝেমধ্যেই
নিজের ঘরের দেওয়ালের উপর অন্যরকম কিছু দেখি। যেমন ধরুন, দেওয়ালের কিছুটা
অংশে তরঙ্গের মতো ঢেউ খেলে যাচ্ছে। কুয়াশার পাতলা পর্দার মতো সরে যাচ্ছে
দেওয়ালের অংশটা। তার ওপারে উঁকি দিচ্ছে একটা অন্য জগৎ। ঝকঝকে সোনা ঝরা
রোদ্দুরের মতো আলোর কণা ভেসে বেড়াচ্ছে সেখানে।'
'এসব আপনি আর কাউকে বলেছিলেন?'
নির্বাণের প্রশ্নের উত্তরে ভদ্রলোক বলেছিলেন
'না। আমায় কেউ পাগল ভাবুক, তা চাইনি। আপনাকে এই জন্য বলছি, কারণ আপনি টাইম ট্রাভেলের বিষয়টা জানেন, বোঝেন।'
ফোনের রিংয়ের শব্দে চমক ভাঙ্গল নির্বাণের। দীপঙ্কর মাইতির ফোন।
"আমি আপনাকে ক'টা ছবি পাঠিয়েছি। দেখুন তো, এই মডেলের গাড়ি চিনতে পারেন কিনা?"
নির্বাণ
ভাবছিল, সরি বলে কথোপকথন শুরু করবে। কিন্তু ওর কিছু বলার আগেই ভদ্রলোক
ছবি, গাড়ি ইত্যাদি নিয়ে কথা বললেন। নির্বাণের বোধ হল, কেমন যেন একটা ঘোরের
মধ্যে আছেন ভদ্রলোক।
দীপঙ্কর
বাবুর কথায় তড়িঘড়ি ছবিগুলো খুলে নির্বাণ দেখল, রকেটের মতো ছুঁচলো বেশ
লম্বা একটা গাড়ি। তিন জোড়া চাকা আছে তাতে। গাড়িটার উপরিভাগ উত্তল। নিচের
কিছু অংশ ছাড়া প্রায় পুরো গাড়িটাই স্বচ্ছ। গাড়িটার নম্বর প্লেট ভেঙ্গে
দুমরে মুচড়ে রয়েছে বলে, কোন জায়গার গাড়ি বোঝা যাচ্ছে না।
"কি, পারলেন?"
দীপঙ্কর মাইতি আবার প্রশ্ন করলেন।
"এরকম
মডেল কোথাও দেখেছি বলে তো মনে পড়ছে না। তবে আমার এক কাসিন ব্রাদারের কাছে
শুনেছিলাম এরকম গড়নের গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে মেট্রো সিটিতে।"
"এবার
মন দিয়ে শুনুন। ওরা এগারো জন ছিল। আধুনিক পোষাক পরা, ক্লিন সেভড পুরুষ।
বেশ কয়েকজনের দেহে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে প্রায় সবারই মাথার সমস্যা
হচ্ছিল। কারণ, কেউ নিজেদের নাম বলতে পারছিল না। আমি কাল রাতে ডিনার সেরে
শুতে যাব, বুধুয়া নিজের কোয়াটারে চলে গিয়েছিল, ঠিক তখনই হাসপাতালের সামনে
এসে দাঁড়িয়েছিল গাড়িটা। আমি শব্দ পেয়ে গেটের কাছে আসতেই ওরা হুড়মুড়িয়ে ঢুকে
পড়েছিল। আমায় দেখে ট্রিটমেন্ট করার অনুরোধ করেছিল পরিষ্কার ইংলিশে। এখন
লকডাউনের প্রভাবে হাসপাতালে রোগীর তেমন ভিড় নেই। কয়েকজন মাত্র জেনেরাল
ওয়ার্ডে ভর্তি আছে। তাই আমি ছাড়া বাকি দুজন ডাক্তার আর পাঁচ জন নার্স
বিকেলেই বেরিয়ে যায় রোজ। আমার অল্প সামর্থ, তাই লোকবলও কম। সেই সময় ওদের
ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গিয়ে একাই সামলানোর চেষ্টা করছিলাম ওদের। বুধুয়াকে ডেকে
নেওয়ার জন্য কল করলে দেখি ওর সুইচড অফ।
ওদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, কিকরে এসব হল?
ওরা
বলল একটা আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যানেল নাকি ভূমিকম্পে ধ্বসে পড়েছিল। তাতে আরও
অনেক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকেই মারা গেছে। তবে ওরা প্রাণে বেঁচে
গেছে।
আমি ওদের প্রাইমারি চিকিৎসা করে শুতে
গিয়েছিলাম। ভোর পাঁচটায় উঠে ওই ঘরে যেতেই শুনি, ওদের মধ্যে একজন বেশ
রহস্যময় গলায় বলছে, আমাদের ফিরে যেতে হবে। ক্যালেন্ডার দেখিয়ে বলছিল সে,
তেইশ বছর পিছিয়ে গেছি আমরা।
আমি চোখ বড় বড় করে
শুনছিলাম সবটা। সারাটা শরীর থরথর করে কাঁপছিল আমার। একটু ধাতস্থ হতেই
ভাবলাম, মোবাইল বের করে ওদের ছবি তুলি। পকেট হাতড়াতে গিয়ে সবে নজর
সরিয়েছিলাম, অমনি সব ভ্যানিশ।"
নির্বাণ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে বলল
"তাহলে এই গাড়ির ছবিটা ..."
"রাস্তার মোড়ের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে।"
ভদ্রলোক উত্তর দিলেন।
"আচ্ছা, আপনার কী মনে হয়, ওরাও মূর্তিটার মতো সময়ের স্রোতে পিছলে নিচে নেমে এসেছিল? এও কি সম্ভব?"
দীপঙ্কর মাইতির কাঁপা গলায় দ্বন্দ্ব।
"শুনেছিলাম,
ইতালিতে ১৯১১ সালে জনেটি কোম্পানির একটি নতুন ট্রেন একশো চার জন যাত্রীসহ
একটা ট্যানেলের মধ্য থেকে উবে গিয়েছিল। মানে ট্রেনটা ট্যানেলে ঢুকেছিল,
কিন্তু আরেক দিক দিয়ে আর বের হয়নি। এই যাত্রীদের একজন আত্মীয় নাকি
পরবর্তীতে ১৮৪০ সালের এক বিস্ময়কর রেকর্ড আবিষ্কার করেছিলেন। একটা
হাসপাতালে হঠাৎই নাকি ১০৪ জন একসঙ্গে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। পরিচয়
দিয়েছিলেন ইতালীয় এক ট্রেনের যাত্রী হিসাবে। তাদের মানসিক অবস্থাও
স্থিতিশীল ছিল না।"
ঘটনাটা শোনার পরে দীপঙ্কর কিছুক্ষণ চুপ করেছিলেন। নির্বাণই বলেছিল
"আপনি
এই নিয়ে আর বেশি ভাববেন না। সময় ব্যাপারটা ভীষণ গোলমেলে হিসাবে জট পাকিয়ে
থাকে। সেই জটের মধ্যে চিন্তার ক্ষেত্রকে পেতে বসলে, সমস্যায় পড়বেন।"
ঠিক
তখনই দীপঙ্করের সামনের মনিটরে একটা ওয়েব মেসেজ ঢুকল। সেখানে যা লেখা আছে
তার বাংলায় অর্থ হল, গতকাল রাতে এক অভিনব সিগনাল ধরা পড়েছে। যা সময়ের কোনও
এক লুপ থেকে অন্য লুপে যাওয়ার ইশারা বহন করছে।
(সমাপ্ত)
অলঙ্করণ :- রিচা দাস