অন্য বসন্ত
সংকলিতা তাম্বুলী চন্দ্র
আজ প্রায় বছর তিনেক পরে, সাসপেনশন পিরিয়ড কাটিয়ে দিল্লীর কমান্ড হেডকোয়ার্টার্স অফিসে জয়েন করছে শুভ্র; এক সিনিয়র দাদার বদান্যতায়। এবারে আর ফাইটার প্লেনে ফ্লাইট গানার হিসেবে কাজ করবেনা সে। গ্রাউন্ড অফিসার হিসেবে অফিসে বসেই কাজ করবে তরুণ এই অফিসার, শুভ্র ব্যানার্জী। সারা অফিস আজ রং-বেরংয়ের বেলুন দিয়ে সাজানো। এটা তো তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য হতে পারেনা। ডেস্কে রাখা ডেট ক্যালেন্ডারের দিকে চোখ পড়তেই লাল কালির তারিখের দিকে তাকিয়ে তার মনে পড়ে গেলো যে আগামী পরশু হোলি - রংয়ের উৎসব। না চাইতেও চোখের সামনে ভেসে উঠলো তিন বছর আগের সেই দিনটি, যেইদিন তাকে তার কর্তব্যের কাছে হয়তো মস্ত এক অপরাধী করে তুলেছিল !!
তিন বছর আগে --
"অ্যাটেনশন জেড্-এ-জিরো-নাইন পাইলট ক্যাপ্টেন শুভ্র ব্যানার্জি, দিস ইজ কমান্ডার ইন চার্জ অনলদীপ সিং। অব্জেক্ট কনফার্মড আ্যট ৩x.xxx২১ ক্রস ৭x.xxx৮০। লোকেট অব্জেক্ট অ্যান্ড সেট ফায়ার ইন থার্টিন সেকেন্ডস।"
"কপি স্যার।" - হেডকোয়াটার্স থেকে অর্ডার পাওয়ার পরে, রিপ্লাই দিয়েছিল শুভ্র।
এরপরই চেনা লোকেশনের উপর অব্জেক্ট সেট করেছিল শুভ্র। ডিসপ্লে বোর্ডে কাউন্টডাউন শেষ হওয়ার আগেই ট্রিগারে হাত চলে গিয়েছিল তার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে, ১ নং এর জায়গায় ৩ নং ট্রিগার প্রেস করে ফেলেছিল সে সেদিন। আসলে, নিজের মনকে সে মানাতে পারেনি, কয়েকটা জঙ্গীকে মারার জন্য বাচ্চাদের একটা গোটা স্কুলের উপর বোম চার্জ করতে!! তাই কুচকাওয়াজের মহড়ার জন্য রাখা আবীর-ভরা সেই জেটের ৩ নং ট্রিগার প্রেস হতেই মার্চের সেই হোলির মরশুমে বোমের ঝলসানো আগুনের পরিবর্তে সারা আকাশ ছেয়ে গিয়েছিল লাল আবীরে। সদা কর্তব্যপরায়ণ তরুণ অফিসারটি সেদিন নিজে হেরে জিতিয়ে দিয়েছিল তার বিবেককে !
ডিসক্লেইমার: সমগ্র গল্পটি কল্পনাপ্রসূত, বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই।
......