সমালোচনা
অর্ণব ভট্টাচার্য্য
“আরে
এসো এসো।” সমরেশকে ঘরে ঢুকতে দেখেই হাতের ম্যাগাজিনটাকে রেখে বলে উঠলেন
অজয়বাবু। সমরেশ খুব উপকারী ছেলে, পাড়ার লোকের বিপদে আপদে ছুটে যায়। আরো
অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করে। সকলের সঙ্গেই তার খুব ভালো সম্পর্ক।
“ ম্যাগাজিন পড়ছিলেন কাকু! ”
“
হ্যাঁ একটা গল্প পড়ছিলাম বুঝলে, জগৎ মিত্র নামে কেউ লিখেছেন। কি বলবো
তোমায়, সেই একই গরীবের দুঃখ কষ্ট নিয়ে গল্প। শুধুমাত্র গল্প হিট করতে এরা
এইসব লেখে। গরীবের জন্য এদের সত্যি সত্যি কোনো দুঃখ টুঃখ হয় না।”
“ না মানে কাকু ”
সমরেশ
ইতস্তত করে কিছু বলতে যাওয়ার আগেই অজয়বাবু হাত তুলে তাকে থামালেন, “ আমি
জানি সমরেশ তুমি কি বলতে চাইছো, তুমি এটাই বলবে তো, যে হতেও পারে লেখকটি
সত্যিই গরীব দুঃখীদের নিয়ে ভাবে, কিছু না জেনেশুনে এরকম বলা উচিত নয়।
শোনো হে সে যুগ পেরিয়ে গেছে। তুমি খুব সরল বলে বিশ্বাস করতে পারছো না। এসব
সেন্টিমেন্টাল লেখা আজকাল শুধু গল্প হিট করার জন্য লেখা হয়। সবাইকে চেনা
আছে।” এমনসময় অজয়বাবুর স্ত্রী ঘরে ঢুকে সমরেশকে বসে থাকতে দেখেই বলে
উঠলেন, “ আরে সমরেশ তোমার মায়ের কাছে শুনলাম তুমি নাকি আজকের ‘সাহিত্য '
ম্যাগাজিনে জগৎ মিত্র নামে একটা গল্প লিখেছো। বাঃ আমাদেরকেও দেখাও একটু। ”
তারপর
অজয়বাবুর দিকে ফিরে বললেন, “ ওর মধ্যে এত প্রতিভা,অথচ দেখো ছেলেটা গল্প
লিখেছে কিন্তু ছদ্মনামে। আসল নামে লিখলে, বন্ধুবান্ধবরা জেনে যাবে, ওকে
নিয়ে মাতামাতি করবে, সেটা নাকি ওর পছন্দ নয়। বোঝো তাহলে ! সমরেশের মা না
বললে বোধহয় আমরাও জানতে পারতাম না। তবে হ্যাঁ ছদ্মনামটা খুব ভালো হয়েছে
কিন্তু, জগৎ মিত্র অর্থাৎ জগতের মিত্র। খাসা!” এই বলে তিনি জোরে হেসে
উঠলেও, সামনে বসে থাকা দুজন সে হাসিতে যোগ দিতে পারলেন না।
.....................................