দেবাঞ্জনা
রঙ্গন রায়
গোবড়াকুড়ি'র মেলায় যেদিন ফুচকার অপূর্ব স্বাদ প্রথম পরখ করালেন
সেদিন আপনি আমার শিক্ষিকা ছিলেন না , প্রকৃত প্রস্তাবে ;
অথচ মৃত্যুর চামড়া পোড়া গন্ধের সাথে সস্তা ধূপকাঠির গন্ধে আমাদের ফুসফুস ভরে উঠেছিল
ছিন্নমস্তার মূর্তি দেখে , ভীত আমার চোখ ঢেকে ফেলা আঙুলের ফাঁকে ,
আপনার হাতের তড়িৎ স্পর্শ , আমাকে মৃত্যুর চেতনা দিয়েছে অনুপাতে।
পুড়ে যাওয়া মাংসের দগদগে ধোঁয়ার মাঝেও মেলার ভীড়
অসমবয়সী দুজনকে নাগিন কন্যার শো দেখতে আগ্রহী করেনি ---
আমি দেখছিলাম , কীভাবে সবাই পুড়ে যাচ্ছে , চিতার মত ;
আপনার নাম , আমি দেবাঞ্জনা রেখেছিলাম সেদিন।
অজ্ঞাতে কত শ্রমিক - চাষীর সন্তানেরা বোধী লাভ করে ফেলেছিলো
স্বপ্নদোষের ঝটকায় ঘুম ভেঙে যাচ্ছিলো গোটা কপিলাবস্তুর -
আমি সেই স্বপ্নের প্রতিটি পৃষ্ঠায় , পেজ মার্ক দিয়ে রেখেছি
স্নিগ্ধ স্নানের শেষে , শাড়িতে যতটা চিকরাশির পাতা এসে লাগে ,
কাঞ্চন ফুলের গন্ধে , গৌতম বুদ্ধের ধ্যান ভঙ্গ হয় ---
প্রজ্ঞাপারমিতা নয় , সুজাতা নয় , দেবাঞ্জনাকেই দরকার , পায়েস পরিবেশনের
হরেক মাল ৫টাকার সামগ্রী ঠেলে , মত কা কুয়ার জোরালো শব্দের দিকে ,
অমন বনলতা'র মত তাকালে , বাইকারোহীদের কন্সেন্ট্রেশন , ক্যাম্পে চলে যেতে পারে।
অথচ আপনি এসবের পরোয়া থোড়াই করতে জানেন!
কাশ্মীরী শাল যেসব মেলায় পাওয়া যায় , আপনি আসেননি সেই মেলায়
এখানে নাগরদোলা অন্য গ্রহের ব্যাপার।
অথচ মাটি থেকে যুধিষ্ঠিরের রথের মত উঠে থাকা আপনি
গ্রামের অভাবী মেয়েদের ভারী বুক দেখে , হীনমন্যতায় ভোগেন ,
ওরা কত সহজেই , আপনার চেয়ে ধনী হয়ে যায় , ভীনগ্রহী বানিয়ে দেয় ,
অনায়াসে।
..............................................